কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমায় বিপাকে হাজারও কৃষক
লংগদু (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় কাপ্তাই হ্রদের পানি সময়মতো না কমায় চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন নিম্ন আয়ের হাজারো কৃষক। হ্রদের জমিগুলো এখনও পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বোরো ধানের আবাদ শুরু করতে পারছেন না তারা। ফলে আগামী মৌসুমে অত্র এলাকায় তীব্র খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণত পৌষ মাসের শুরুতেই যেসব জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়, সেসব জমি এখনও হ্রদের পানিতে তলিয়ে আছে। বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে এখন ধানের বদলে ঢেউ খেলছে পানি।লেকের ভাসমান জমিতে চাষাবাদ করা কৃষক আবুল হোসেন ও জাফর মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ বছর ধরে এই জমিতে ধান ও মৌসুমি ফসল ফলাই। কিন্তু এবছর সরকার কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রেখেছে। সময়মতো পানি না কমলে আমরা না খেয়ে মরব।’উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লংগদুতে মোট ৮ হাজার হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জায়গা এখনো পানিতে ডুবে আছে। উপজেলার প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কৃষক এই জমির ওপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে বগাচতর, গুলশাখালী ও মাইনীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা ধানের বীজ তলা তৈরি করলেও মূল জমিতে তা রোপণ করতে পারছেন না। কৃষকদের মতে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পানি না কমলে আবাদের মৌসুম পার হয়ে যাবে।লংগদু উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যান তত্ত্ববিদ রতন কার চৌধুরী জানান, ‘যে হারে পানি কমছে, তাতে সঠিক সময়ে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। কৃষকদের বাঁচাতে এই মাসের মধ্যেই দ্রুত পানি কমানো প্রয়োজন।’এ বিষয়ে পিডিপির ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান মোবাইল ফোনে জানান, ‘গত কিছুদিন আগে একটি মিটিংয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত হ্রদের পানি না কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’ কৃষকদের সমস্যার কথা তুললে তিনি দাবি করেন, লেকে যে পরিমাণ পানি থাকার কথা তার চেয়ে বরং ৫ ফুট কম আছে। তবে পানি ছাড়ার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।অন্যদিকে, লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘কৃষকদের এই সংকটের কথা চিন্তা করে আমরা দ্রুত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে দ্রুত পানি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’