নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫’। ‘আমার দেশ, আমার আশা— দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে আয়োজিত এই মেলা দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে ঢাকার কুড়িলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
কনভেনশন সেন্টারটির গুলনকশা (হল–১), পুষ্পগুচ্ছ (হল–২) এবং রাজদর্শন (হল–৩) হলে পাঁচ দিনের এই মেলা হচ্ছে।
ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ এবং বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে প্রেসিডেন্ট ড.কে এম আকতারুজ্জামান।
বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমানের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মেলা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির আহ্বায়ক আলহাজ্ব শেখ আব্দুল আউয়াল, সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, মহাসচিব এ করিম মজুমদার, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস সরকারসহ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এই সেক্টরের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী এবং তিনি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, দেশ কীভাবে দ্রুত বৈশ্বিক ফার্নিচার বাজারে স্থান দখল করতে পারে, তা দেশীয় সুযোগ এবং সম্পদ মিলিয়ে কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া মেলা আয়োজন বাড়িয়ে এবং রপ্তানি বাজার প্রসারিত করার লক্ষ্যে তিনি এই মেলাকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা সম্পর্কে কথা বলেছেন।
এ সময় রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ রপ্তানি বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, দেশের আয় বাড়াতে রফতানি বহুমুখীকরণের বিকল্প নেই। ফার্নিচার শিল্প এখন দেশের সম্ভাবনাময় একটি খাত একে রপ্তানি-নির্ভর খাতে পরিণত করতে হবে। দেশীয় কাঁচামাল ও দক্ষ শ্রমশক্তির ব্যবহার করে আমাদের নিজস্ব কাঁচামাল, আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন সম্ভব। এতে বিদেশি বাজারে বাংলাদেশি ফার্নিচারের অবস্থান আরও মজবুত হবে।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ফার্নিচার খাতকে রপ্তানি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নীতিগত সহায়তা ও প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে যাতে উদ্যোক্তারা উৎসাহ পান এবং নতুন বাজারে প্রবেশ করতে পারেন। এ ধরনের মেলা উদ্যোক্তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে এবং দেশীয় ফার্নিচারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে।
মোহাম্মদ হাসান আরিফ বাংলাদেশের ফার্নিচার শিল্পকে ভবিষ্যতের রপ্তানি-ভিত্তিক প্রধান খাতগুলোর একটি হিসেবে দেখছেন। তিনি উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তি, নকশা ও গুণগত মানে উদ্ভাবন আনার আহ্বান জানান এবং সরকারও এই খাতে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা দেবে বলে আশ্বাস দেন।
ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা।
এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে।
অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি।
মেলার উদ্বোধনী দিনে শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২০ জন শিশু-কিশোরকে পুরস্কৃত করা হয়। মোট পুরস্কারের অর্থমূল্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা।
মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার। পার্টনার হিসেবে থাকছে অ্যাকসেস ইনফোটেক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available